নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, যার মধ্যে দেশাত্মবোধ আছে, তারা যেন রাজনীতি করি, অপরাজনীতি না করি। অপরাজনীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে বাইরে আসতে হবে।

নতুন প্রজন্মকে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। অপরাজনীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সুন্দর ও সুস্থ ধারার রাজনীতি দেশে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।

এছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খানের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, বিইউপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসাইন ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, যারা রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের মন জয় করতে পারে না, তারা সব সময় অপরাজনীতি করে। সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের হলো সবচেয়ে ভালো ব্যবসায়িক জায়গা। সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করা যায়। মানুষকে যদি ধর্মীয়ভাবে উস্কানি দেওয়া যায়, তাহলেই বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করা যায়। আমাদের দুর্ভাগ্য সেই ব্রিটিশ আমল থেকে আমরা অপশক্তি বা অপরাজনীতি থেকে মুক্তি পাচ্ছি না।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বলেই পাকিস্তান গঠনের পর তিনি অপরাজনীতির বিরুদ্ধে রাজনীতি শুরু করলেন। তিনি ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন। আজকে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে। আপনি যদি রাজনীতি করতে পারেন, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, তাহলে কোনো সরকার দরকার হয় না। রাজনীতি আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি রাজনীতি করি, অপরাজনীতি না করি, তাহলে কোনো বাধাই বাধা না। এখন সময় এসেছে রাজনীতি করার। আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, যার মধ্যে দেশাত্মবোধ আছে, তারা যেন রাজনীতি করি, অপরাজনীতি না করি। আমাদের অপরাজনীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে বাইরে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিপক্ষে দাঁড়াতে হবে। অপরাজনীতির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে সুন্দর, সুস্থ ধারার রাজনীতি দেশে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, রাজনীতির মধ্যে যখন অপরাজনীতি প্রবেশ করে, তখন জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। বিএনপি-জামায়াত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। আমরা তাদের গত ১৫ বছরে দেখিনি জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে, সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বলতে যে, সরকারের এই এই জায়গা খারাপ। কিন্তু সেটি না করে তারা যেই পথে গেছে সেটি সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র বিরোধী পথ। এই পথে গেলে আমাদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অপরাজনীতির পথ পরিত্যাগ করতে হবে। যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, তারা সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলুন, গণতন্ত্রের দিকে আসুন। আসুন আমরা আমাদের দেশটাকে গড়ে তুলি। গড়ে তুললেই আমরা সবাই কাজ করার সুযোগ পাবে।